দুগ্গা ঠাকুর ভালো
তার রূপে ভুবন আলো
লক্ষ্মী সরস্বতী
তারা সত্যি গুণবতী
ফুলবাবু কাত্তিক
যেন জামাইবাবু ঠিক
গনেশ দাদার ভুঁড়ি
হয় দিতে সুড়সুড়ি
বিদ্ঘুটে ওই অসুর
যেন আন্নাকালীর শ্বশুর।
না, এই ছড়া আমার লেখা নয়। এই ছড়া আমি শিখেছিলাম আমার বাবা-কাকাদের কাছে, যখন আমি তাঁদের কোলে কোলে ঘুরে দুগ্গা ঠাকুর দেখতে যেতাম। কার লেখা ছড়া , তাও জানিনা। কিন্তু ছোট্টবেলা থেকে শুনে শুনে মুখস্থ হয়ে গেছে।
একটু বড় হয়ে যখন শব্দগুলির মানে বুঝতে শিখলাম, তখন বুঝলাম এই ছড়ার বেশিরভাগ কথাগুলিই যথেষ্ট ন্যায্য। তবে যে দুটি পংক্তি সব থেকে বেশি মনের মধ্যে ঘুরত তা হল ‘ বিদ্ঘুটে ওই অসুর /
যেন আন্নাকালীর শ্বশুর ‘; আন্নাকালী কে, আর অসুর কেনই বা তার শ্বশুরের মত দেখতে হতে যাবে, এই নিয়ে অনেক ভাবনা চিন্তা করেছি এক সময়ে।অনেক ভেবে ঠিক করেছিলাম, আন্নাকালী যেই হোক না কেন, অসুর কে তার শ্বশুর খেতাব দেওয়াটা আন্নাকালীর প্রতি সুবিচার হয়নি। অসুর বাপু অসুরই- সে আর কিছু হতে পারেনা।
কিন্তু প্রথম দুটি পংক্তি –
দুগ্গা ঠাকুর ভালো
তার রূপে ভুবন আলো-
এর মত সত্যি কথা বোধ হয় আর কিছু হয়না। পাঁচ থেকে পঁচাশি – সবাই এই কথায় ঘাড় কাত করবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। এই যে বর্ষা যেতে যেতেও ফিরে আসছে, তার মাঝেই হটাত হটাত করে ঝকঝকে নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মত সাদা সাদা মেঘ, সোনালি রোদ ঝিলিক দিয়ে দিয়ে উঠছে, দিঘীর জলে পদ্মফুল, বাগানের কোণ আলো করে ছড়িয়ে থাকা শিউলিফুল- এ সব দেখে অতি বড় বেরসিক ও মন বদলাবেন আর দু -দন্ডের জন্য প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে উপভোগ করবেন।আর আমি যদি বলি বাপের বাড়ি আসার আগে, শেষ বৃষ্টি্র জলে নেয়ে ধুয়ে, মুখে তুলোট মেঘের পাফ বুলিয়ে একটু সেজে নিলেন উমা,খোঁপায় জড়ালেন শিউলির মালা, হাতে নিলেন পদ্মকলি, পরণে তাঁর আসমানি রঙ জামদানি শাড়ি, যার জরি ঝলক আর সোনার আভরণের ছটা মিশে আছে শরত সকালের ঐ মিষ্টি সোনালি রোদে- তাহলে কেমন হয়?
দিনে সোনালি সূর্যালোক, রাতে পথের পাশে ঝলমল করতে থাকা আলোর মালা, আলোর তোরণ, আলোয় সাজানো মন্ডপ। দশভূজা মায়ের রূপের ছটায় সত্যিই যেন দিকবিদিক আলোক ময়। সেই আলো যেন ধুয়ে দিচ্ছে সব গ্লানি, মুছে দিচ্ছে সব কালিমা; ছড়িয়ে যাচ্ছে আনাচে-কানাচে – ফুটপাথের কোনায়- সিঁড়ির বাঁকে-ওভারব্রীজের নিচে-মেট্রোস্টেশনের ম্যুরালে-হাটে-বাজারে। ছেলে-মেয়ে সাথে নিয়ে চার দিনের জন্য বাপের বাড়ি এসেছেন উমা- এই চারদিন চাই না কোন মন খারাপ- মুখভার-দ্বেষ-কলহ। আলোকিত হোক সবার মন, আলোকিত হোক নিত্যদিনের জীবন।
লক্ষ্মী, সরস্বতী, কাত্তিক, গণেশ, আন্নাকালী আর- হ্যাঁ- এমনকি অসুর ও – এই ক’টা দিনে সবাই যেন থাকে ভাল, কারণ- দুগ্গাঠাকুর যে ভাল !
আলো জ্বালাও আলো
দুগ্গা ঠাকুর এল।
মুছিয়ে দেবে যতেক কালো
দুগ্গা বড় ভালো।
মহাশ্বেতা রায়
দুগ্গা ঠাকুর সত্যি ই ভালো আর সেইসঙ্গে ভাল মহাশ্বেতার কলমখানি থুড়ি কী-বোর্ড খানি। আচ্ছা অসুরগুলো বেশীরভাগ সবুজ হয় কেন আর গনেশ গোলাপী, এটা কি কেউ জানে!!! সেই কোন ছোট্টবেলা থেকে আমার এটা কোশ্চেন…
খুব ভালো লেগেছে।
Asadharan hoyechhe apnar lekhati. Apnar lekha pore amio phire giyechhilam sei fele asa din gulite. Thanks for such a lovely article. Wish you all the best.
bah…darun laglo porte….! jhokjhoke…ma Duggar rooper moton….
chomotkar !