সেই বাংলা বছরের প্রথমদিনে প্যাপিরাসের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছিল ।
ততদিনে সুনীতা উইলিয়ামস ভেসে রয়েছেন এই মহাবিশ্বে, মহাকাশে । কিউরিয়োসিটি খোঁজ নিতে গেছে মঙ্গল গ্রহের জল-মৃত্তিকার খুঁটিনাটি কিম্বা একরত্তি জীবনের । এবারের অলিম্পিকও আমাদের একেবারে নিরাশ করেনি । স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন এক বাঙালি । উত্তরপ্রদেশের এক বাঙালী বৈজ্ঞানিক নোবেলের সমতুল্য সম্মানে ভূষিত হয়েছেন । “রিসেশন-ইনফ্লেশন” চাপানোতরের পাশাপাশি সামাজিক দুর্ঘটনার ভয়াবহতায় মাদুর্গাকে স্মরণ করেছি মনেমনে । আমাদের সকলের শুভকমনায় আর মাদুর্গার আশীর্বাদে ক্রিকেটের মাঠ আলো করে আবার যুবরাজ সিং ব্যাট হাতে ধরেছেন । অনেক গুণী মানুষকে আমরা হারিয়েছি এই কয়েকটা মাসে ।মনে মনে অনুভব করেছি..”একলা ঘরে হাতড়ে মরি, শিল্পী তোমার শূন্যতা” !
এই ছ’টি মাস প্যাপিরাসের নিরম্বু উপবাস । শুধু পাঠকমহলের আদর প্যাপিরাসের পাথেয় যুগিয়েছে । লেখক, কবি এবং সর্বোপরি পাঠকদের ভালোলাগা আর ভালোবাসাকে সাথে নিয়ে হৈ হৈ করে সেজেগুজে প্যাপিরাস সাজিয়েছে তার পুজোসংখ্যাটিকে ।
আমাদের এবারের সবচেয়ে বড়প্রাপ্তি হল চিলেকোঠার ঘর ঝেড়ে পাওয়া স্বর্গতঃ শুভ্রেন্দু মুখোপাধ্যায়ের একখানি কবিতার খাতা । পাতার রঙটা বাদামী হয়েছে যার সময়ের সাথে সাথে কিন্তু পেন্সিলে লেখা খাতাভর্তি কিছু দুষ্প্রাপ্য কবিতা আজো অমলিন । ১৯৪৪ সালে ছাত্রাবস্থায় মাত্র ১৭ বছর বয়সে লেখা কবিতাগুলির মধ্যে থেকে দুটি কবিতা এবারের প্যাপিরাসকে সমৃদ্ধ করেছে ।
বেশকিছু রন্ধন পটিয়সী “হোমমেকার” স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্যাপিরাসকে উপহার দিয়েছেন তাঁদের কিছু সেরা পূজোর রেসিপি । একাকীত্বের অবসাদ কাটিয়ে অনেক বছর বাদে কলম ধরেছেন খড়গপুরের বিশ্বজিত সরকার । রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে তাঁর চাক্ষুষ অনুভূতি ফুটিয়ে তুলেছেন একদা বাংলা সাহিত্যের এই ছাত্র। আমাদের কবিবন্ধুদের জানাই মুঠোমুঠো শিউলিঝরা অভিনন্দন । এবারের শব্দসীমা লঙ্ঘন না করে অনেকেই লিখেছেন সুন্দর অণুগল্প, ছোটগল্প এবং ভ্রমণ বৃত্তান্ত ।
পাঠকদের অনুরোধে এবার থেকে প্যাপিরাসে রাখলাম একটি বিষয়ের ওপর ফোরাম বা আলোচনা চক্র যার নাম দিলাম “চক্রবৈঠক” । সমাজের বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন বয়সের মানুষের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছিল আমন্ত্রণ মূলক লেখা, বিষয়টি ছিল “ইন্টারনেট” । তাদের সাড়া পেয়ে প্যাপিরাস আপ্লুত এবং অনুভূত । এত ব্যস্ততার মধ্যে সকলে যে সুচিন্তিত মতামত পাঠিয়েছেন সে জন্য আরো একবার তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই ।
এবার যেন “হেমন্তে শরত” এর পথ চাওয়া । তাই বুঝি অতিবৃষ্টি আর খরার টানাপোড়েনে আমরা কাবু না হয়ে একটু বেশি সময় হাতে পেয়েছি পুজোসংখ্যা প্রকাশের ।
জীবনের আলপথগুলো গুলো চলতে চলতে অনেক বন্ধু এল চারপাশে । একঘেয়েমি কাটল ফেসবুকের একচিলতে ব্যালকনিতে । চলতে থাকে জীবন। আলগোছে, আলতো পায়ে । মনের কার্ণিশ বেয়ে নিঃশব্দে উঁকি দেয় এসেমেস। বেজে ওঠে মুঠোফোন ঝন্ঝন্ । আমার মনোবীণায় সে ঝঙ্কারে হয়ত সামিল হয় অচেনা কোনো পাখি । ইনবক্সে উড়ে আসে অচেনা মেল, হঠাত মেল । বলে প্যাপিরাসকে ভালোবাসার কথা ।
চলতেই থাকে জীবন ছেঁড়া ছেঁড়া কবিতার ঘ্রাণ নিয়ে.. অলস সময় পেরিয়ে যায় বৃষ্টিপথ, ভাবনার গদ্যেরা ভেসে যায় আপন খেয়ালিপথে, আলগোছে, আলতো পায়ে… প্যাপিরাসের হাত ধরে ! মনে মনে বলে উঠি,তুমি মেঘ-রোদ-বৃষ্টি হলে আমার ড্রইং বারান্দায়
তুমি আলো-আঁধারের খালপাড়ে, আমি ভরাবর্ষায় ।
বৃষ্টিফোঁটায় কবিতা হতে চেয়েছিলে তুমি
আর আমি তোমার কর্ণিকা ।
জড়িয়ে ছিলে দুচোখে, ভরেছিলে ভোরবেলা
দিয়েছিলে সন্ধ্যে, অনেক অনেক আনন্দে ।
তবু এখনো বর্ষা হতে পারলাম কই ?
কিন্তু “বর্ষা” হওয়ার চেষ্টা তো আমরা করতেই পারি তাই নয় কি ? তাই তো গ্রামবংলার শিল্পকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার চেষ্টায় প্যাপিরাসের পুজোসংখ্যার থিম গ্রামবাংলার পটচিত্র । মেদিনীপুরের মেলায় এবছর আলাপ হয়েছিল এক পটু পটশিল্পী দম্পতির সাথে । খড়গপুরে তাদের আমরা আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে বেশ কিছু পটচিত্র আঁকিয়েছিলাম বাংলার এই শিল্পকে সম্মান জানানোর জন্য । বন্ধুবান্ধবের অনুরোধে তারা নানারকমের পটশিল্প সামনে বসে এঁকে পট-ভিত্তিক আনুষাঙ্গিক ঘরসাজানো এবং ফ্যাশানের জিনিষ বিক্রি করে যারপরনেই খুশি হয়ে বাড়ি ফিরেছিল তাদের লক্ষ্মীর ঝাঁপি নিয়ে । সেই দম্পতিকে খুশি করতে পেরে আমরা, যারা সেদিন তাদের পাশে ছিলাম তারাও আপ্লুত হয়েছিলাম ।
এবারের প্যাপিরাস পুজোসংখ্যাতে সেই অভিনব লোক-শিল্পের ছোঁয়া লেগেছে । পূর্ব মেদিনীপুরের নানকারচক গ্রামের বাসিন্দা বাবলু পটিদার ও আয়েষা পটিদার অক্লেশে বাঁচিয়ে রেখেছেন তাদের ২৫০ বছরের পুরোণো বংশ পরম্পরার ঐতিহ্য । মাদুর্গার কাছে প্রার্থনা করি তাঁরা যেন আরো বেশি প্রচারের আলোয় আসতে সক্ষম হন !
সকলের পুজো আনন্দে কাটুক ! প্যাপিরাসের লেখক ও পাঠকদের জানাই শারদীয়া শুভেচ্ছা।
ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়
http://www.sonartoree.com
|
Darun hoechhe ebar…congrats!!!! introduction diye para suru korlam
বাহঃ । প্যাপিরাসকে অনেক শুভেচ্ছা জানালাম।
darun likhechhis………….mon bhore gelo pore……….
neena.
Tomar antorik prochestay ektu ektu kore egiye cholche Papyrus…agami dine papyrus er aro unnoti kamon kori….
Indiradi, tomar hat dhore ektu ektu kore egiye choleche Papyrus..agamidine Papyrus aro unnoti kamona kori…Papyrus evabei joyodhoja uriye egie choluk Srishti sukher Ullase
অনেক শুভেচ্ছা।